ইন্টারনেটে অর্থ উপার্জন (Make Money Online) - দ্বিতীয় পর্ব।
Writen by : R Baidya
Writen by : R Baidya | Date : 27 Dec 2019 | Bookmark : Add

ইন্টারনেটে অর্থ উপার্জন (Make Money Online) দ্বিতীয় পর্বে কিভাবে ব্লগিং (Blogging) করা যায়, এবং ব্লগ (Blog) থেকে কিভাবে অনলাইনে উপার্জন করা সম্ভব তা নিয়ে বিস্তারিত জানব। এছাড়াও কয়েকটি ব্লগের বিষয় বা নিশ (Niche) সম্পর্কে জানাবো, যে বিষয় গুলিতে ব্লগিং (Blogging) করলে আপনিও একজন সফল ব্লগার ও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। (Blog) থেকে অর্থ উপার্জন করার পূর্বে ব্লগ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
ব্লগ (Blog) কি ? ব্লগ (Blog)-এর প্রকারভেদ
আমরা অনেকে প্রত্যাহিক জীবনের নানা ঘটনা বা অভিজ্ঞতা কথা আমাদের নিজস্ব ডায়েরিতে (Diary) লিখে রাখি। তেমনি অনেকে আছেন যারা তাদের অভিজ্ঞতা ইন্টারনেটে ওয়েবসাইট লিখে রাখেন বা প্রকাশ করেন। সেটা হতে পারে কোন ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কিম্বা কোন সমস্যার সমাধানের উপায়। সেই সব ওয়েব সাইটকে সাধারণত ব্লগ (Blog) বলা হয়ে থাকে। ব্লগ (Blog)-এর প্রকার অনুযায়ী মুলত দুই প্রকারের ব্লগ (Blog) হয়ে থাকে।
- ব্যাক্তিগত ব্লগ (Personal Blog) : এই ধরনের ব্লগ (Blog) সাধারণত কোন ব্যাক্তি তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনাবলীর অভিজ্ঞতা ইন্টানেটে লিখে রাখে বা প্রকাশ করে। কোন প্রকার অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে নয়। এই ধরনের ব্লগকে অলাভজনক ব্লগ (Blog) বলাও হয়।
- নির্দিষ্ট বিষয় ভিত্তিক ব্লগ : এই ধনের ব্লগ সাধারণত কোন বিষয় উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়। সেটা কোন জিনিসের গুনমাণ বর্ননা দেওয়া, কোন সমস্যার সমাধানের উপায় বর্ননা কিম্বা অনলাইন সংবাদ প্রকাশ ইত্যাদি বিষয় হতে পারে। এই ধরনের ব্লগ (Blog)-এ মুলত বিভিন্ন কম্পানির বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, এফিলিয়েট মার্কেটিং ও স্পনসর করে অর্থ উপার্জন করে থাকে। এই ধরনের ব্লগকে লাভজনক ব্লগ (Blog) বলাও হয়।
নিশ (Niche) কাকে বলে ?
নিশ (Niche) হল কথার অর্থ হল বিষয়। অর্থাৎ কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কোন ব্লগ (Blog) তৈরি। কোন ব্লগ শুরু করার পূর্বে নিশ বাছাই করা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন ধাপ। বর্তমান সময়ে ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে নিশ (Niche) কে মুলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
- Macro Niche Blogging : এই ধরনে নিশ (Niche)-এর ব্লগিং বলতে কোন বিষয়ের সবকিছু নিয়ে গঠিত। উদাহরণ সরূপ টেকনোলজি বিষায়ক ব্লগিং। এতে একদিকে যেমন মোবাইল বিষায়কও থাকে, তেমনি অন্যদিকে কম্পিউটার বিষায়কও থাকে।
- Micro Niche Blogging : এই ধরনে নিশ (Niche)-এর ব্লগিং কোন ম্যাক্রো নিশ (Macro Niche)-এর কোন একটি শাখা নিয়ে তৈরি করা হয়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় Jio টেলিকম নেটওয়ার্ক-এর বিভিন্ন বিষয় যেমন - Jio প্ল্যান, Jio Giafiver ইত্যাদির বিবরণের একটি ব্লগ। বর্তমানে এই ধরনের ব্লগ-এ খুব কম সময়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
- Event Blogging : কোন পূজা বা বিশেষ দিনের শুভেছার বার্তা (Message), ছবি (Image) ইত্যাদি নিয়ে অনেক ওয়েব সাইট তৈরি। এই ধরনের ব্লগ কে Event Blogging বলে। বর্তমানে এই ধরনের ব্লগ খুব কম চলে, কারন এই ধরনের ব্লগে Google Adsense থেকে অনুমোদন পাওয়া যায়না বল্লেই চলে।
ব্লগ (Blog) থেকে কিভাবে অর্থ উপার্জন সম্ভব ?
কোন ব্লগ (Blog) থেকে অর্থ উপার্জনের প্রথম বা প্রথমিক মাধ্যম হল বিজ্ঞাপন। আমাদের এশিয়ার দেশ গুলিতে কোন ব্লগ (Blog)-এর সিংহভাগ আয় বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের থেকে আসে। এক্ষেত্রে Google Adsense, Media.net বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক সবথেকে বেশি উপার্জন দিয়ে থাকে। এরপর দ্বিতীয় মাধ্যম হল এফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আসে। এছাড়াও স্পনসরশিপ বিজ্ঞাপন থেকেও কোন কোন ব্লগ (Blog) অর্থ উপার্জনের করে থাকে।
ব্লগিং (Blogging) শুরু করার পূর্বে কি কি বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন
ব্লগিং (Blogging) হল সৃজনশীলতা মূলক কাজ। একজন ব্লগার-এর অর্থ উপার্জনের থেকে তার সৃজনশীলতাকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
ব্লগিং (Blogging) শুরুর পূর্বে যে যে বিষয় গুলির উপর নজর দেওয়া অত্যান্ত প্রয়োজন তা হল-
- সঠিক নিশ (Niche) নির্নয় : কোন ব্লগ (Blog)-এর জনপ্রিয়তা নিশ (Niche) বা বিষয়ের অনেকাংশেই উপর নির্ভর করে। কম প্রতিযোগিতা (Low Competition) মূলক নিশ (Niche) বা বিষয়ের ওয়েব সাইট খুব কম দিনেই জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হয় এবং পরোক্ষভাবে অর্থ উপার্জনও কম সময়ে সম্ভব। তবে নির্বাচিত নিশ (Niche) বা বিষয়ের সম্পর্কে যতেষ্ট জানা বা অভিজ্ঞতা থাকা বাঞ্ছনীয়।
- Unique Content : ব্লগ (Blog)-এর নির্বাচিত নিশ (Niche) বা বিষয়ের সম্পর্কে অন্তত পক্ষে 50-100 টি Unique Content-এর প্রতিবেদন থাকা প্রয়োজন।
- ওয়েব সাইটের ডোমেই, হোস্টিং ও ডিজাইন : ব্লগ (Blog) শুরু করার পূর্বে ওয়েব সাইটের ডোমেই ও হোস্টিং প্রয়োজন অনুযায়ী নেওয়া প্রয়োজন। (এক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট কোর্স থেকে ওয়েব সাইটের ডোমেই ও হোস্টিং ধারনা নিতে পারেন। ) এছাড়া ব্লগ (Blog)-এ ওয়েব সাইটের ডিজাইনও ভিজিটরকে অনেকাংশে আকর্ষণ করে। তাই ওয়েব সাইটের ডিজাইনও ভালো হওয়া প্রয়োজন।
কিভাবে একটি ব্লগ (Blog) বানাব ?
ব্লগ (Blog) বানানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাটফর্ম বাজারে বর্তমানে। এর মধ্যে অন্যতম হল Blogger.com, WordPress, Wix.com, Joomla ইত্যাদি। এছাড়াও চাইলে কোন ওয়েব ডিজাইনার-এর থেকে ওয়েব সাইট ডিজাইন করা সম্ভব, সেক্ষেত্রে অনেকে ব্যয় সাপেক্ষ। এখানে ব্লগ (Blog) সম্পর্কে ধারনা দিতে Blogger.com থেকে একটি ব্লগ (Blog) তৈরি করে সেখানে কিভাবে পোস্ট লিখতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করব। মনে রাখবেন Blogger.com হল Google-এর একটি ফ্রি সার্ভিস, এখানে আপনি বিনামূল্যে একটি ব্লগ তৈরি করতে পারবেন।
Blogger-এ একাউন্ট তৈরি করা :
Blogger-এ একটি ব্লগ তৈরির জন্য প্রথমে Blogger.com এ প্রবেশ করুন। এরপর Create Your Blog অথবা Sign in-এ ক্লিক করুন এবং আপনার Gmail দিয়ে লগইন করুন।
এবার আগত পেজে Display Name হিসাবে সেই নাম নির্বাচন করুন, যে নাম প্রতি পোষ্ট প্রদর্শিত হবে। এরপর Continue to blogger বাটনে ক্লিক করুন।
এরপর Create a new blog এ ক্লিক করুন এবং Title, Address এবং Theme সিলেক্ট করুন। এখানে মনে রাখবেন Title হল আপনার ব্লগ-এর নাম এবং Address হল আপনার ওয়েবসাইটের URL. এছাড়া Theme হল আপনার ওয়েব সাইটের ডিজাইন। অর্থাৎ ব্লগের কোথায় মেনুবার থাকবে বা ব্লগ কি রঙের হবে এসবই Theme-এর উপর নির্ভর করে। সর্বশেষে Create Blog বাটনে ক্লিক করুন।
Blogger-এ পোস্ট যুক্ত করা :
Blogger-এ পোস্ট লেখা বা যুক্ত করার জন্য লগইন থাকা অবস্থায় New Post বাটনে ক্লিক করুন। এবার একটি ইনপুট ফর্ম খুলবে। যেখানে উপরের ইনপুট বক্সে পোস্ট-এর শিরোনাম বা Title লিখতে হবে এবং Main Content Box-এ পোস্ট-এর বিবরণ দিন।
এরপর লেখার শেষে ডানদিকে Publish বাটনে ক্লিক করে লেখা পোস্টটি Publish করতে পারেন। এবং Publish হয়ে গেলে পোস্টটি আপনার ব্লগ-এ দেখতে পাবেন। অথবা চাইলে কোন পোস্ট Publish করার পূর্বে Preview বাটন ক্লিক করে পোস্টটি কেমন হয়েছে দেখে নিতে পারেন এবং Save বাটনে ক্লিক করে পোস্টটি সেভ করতে পারেন।
বাম দিকের উপরে View blog বাটনে ক্লিক করে অথবা Address (URL) খুলে আপনার ব্লগ দেখতে পাবেন।
** পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন যারা শিখতে ইচ্ছুক এবং কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান ।
Comments
No review